কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের বাজারগুলোতে গত সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও,কমেনি কাঁচা মরিচের দাম। জেলার পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচের দাম একদিনে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। যা গত দুদিন আগেও কেজিতে ৬০ টাকা ছিলো। অন্যদিকে,সয়াবিন তেলের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও এখনও পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। বুধবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলা শহরের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো ঘুরে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।
কুড়িগ্রাম শহীদ জিয়া বাজারস্থ পেঁয়াজ-মরিচের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে এলসি পেঁয়াজের পাইকারি দাম কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা কমে প্রতি কেজি ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা। দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকায়। রসুনের দাম নাগালের মধ্যে স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি রসুন পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। আর ৬০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়।
এদিকে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে বেড়েই চলছে গরু, মুরগি,হাঁস ও খাসির মাংসের দাম। গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা,হাঁস প্রতি জোড়া ১৬০০ টাকা এবং দেশি মুরগি প্রতি কেজি সাড়ে ৪ শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।
ক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের দাম নিম্নমুখী হলেও কাঁচা মরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী। পেঁয়াজের দামে কিছুটা কমতে না কমতে মরিচের দাম বাড়তে শুরু করেছে। মুরগি আর মাংসের দামও দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এটাকে ‘তামাশা’ বলছেন ক্রেতারা। রমজানের আগেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করে বাজার দর সহনীয় পর্যায়ে আনার দাবি জানান ক্রেতারা।
জিয়া বাজরের পাইকারি বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম জানান,গত শনিবার পর্যন্ত কাঁচা মরিচের পাইকারি মূল্য ছিল প্রতি কেজি ৬০ টাকা। কিন্তু গত দুদিন থেকে তা প্রতি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবং খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে সেটি বিক্রি হচ্ছে । তবে মরিচের বাজার ওঠা নামা করছে বলে জানান এই বিক্রেতা।
এদিকে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সব পণ্যের মূল্য নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের জন্য বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ফলে জীবনযাপনের অন্য বিষয়গুলোতে ঘাটতি হচ্ছে তাদের। শ্রমজীবীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে স্বল্প আয়ের এসব মানুষ হাঁপিয়ে উঠছেন।
শহরের দাদা মোড়ে রিকসা নিয়ে আসা আফসার আলী বলেন,সারাদিনে আমার আয় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এই টাকা দিয়েই আমাকে ৫ জনের সংসারের জন্য চালসহ অন্যান্য দ্রব্য কিনতে হয়। দিন শেষে বাজার ঘুরে শূন্য পকেটে বাড়িতে ফেরতে হয় । ফলে সংসারে অন্য প্রয়োজন মেটানো আমার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,’আমরা বাজার তদারকি বাড়িয়েছি। যারা কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করবেন এবং নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে নিত্যপণ্য বিক্রি করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
GIPHY App Key not set. Please check settings